Travel
জেনে নিন সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের খুঁটিনাটি
বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হচ্ছে সাজেক ভ্যালি। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ভীর করে এর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য । দেশী বিদেশী প্রায় সব বয়সী পর্যটকরা ভিড় করে এখানে। বর্ষা ও শীত এই দুই সময় সাজেক সাজে নতুন সাজে। বর্ষাকালে মেঘের উপরে যেতে আপনাকে আসতে হবে সাজেক ভ্যালি। পাহাড়ের উপর আপনি আর নিচে মেঘ, এ যেন স্বপ্নের হাতছানি।
সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত। সাজেকের মোট আয়তন ৭০২ বর্গমাইল এবং এর উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০০ ফুল। যারা শীতে বা বর্ষায় সাজেকে ঘুরতে যেতে চান তাদের জন্যই এই গাইডলাইন মূলক লেখনী।
কিভাবে যাবেন সাজেক ভ্যালি
আপনি চাইলে দুইভাবে সাজেক ভ্যালি যেতে পারেন ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি অথবা ঢাকা থেকে দীঘিনালা। আপনি ঢাকা থেকে যদি খাগড়াছড়ি যেতে চান তাহলে আপনার যেতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা। বিভিন্ন জায়গা থেকে খাগড়াছড়ির বাস পাওয়া যায় যেমন আব্দুল্লাহপুর, গাবতলী, কলাবাগান, পান্থপথ। শ্যামলী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন ইত্যাদি বাস এই রুটে চলাচল করে। নন এসি বাস ভাড়া ৭৫০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। তাছাড়া আপনি ঢাকা থেকে দীঘিনালা যেতে চান তাহলে আপনি শান্তি পরিবহন করে যেতে পারেন। বাস ভাড়া ৮২০ টাকা।
খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর আপনাকে সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতে পারেন আপনি কয়েকটা বাহনে করে যেমন, সিএনজি, মোটরসাইকেল, এবং চান্দের
সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহন হচ্ছে চান্দের গাড়ি। চান্দের গাড়ি পুরো ভাড়া করতে লাগবে ৭৫০০ থেকে ১৩০০০ টাকা, মোটরসাইকেল ভাড়া করতে লাগবে ১৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
দীঘিনালা বাস টার্মিনালে নেমে আপনার চোখ পড়বে চান্দের গাড়িতে। এখান থেকে চান্দের গাড়ির ভাড়া পড়বে ৬০০০ থেকে ১১০০০ টাকা।
থাকবেন কোথায়
সাজেক ভ্যালিতে থাকার জন্য রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। সাজেকে রয়েছে বেশ কিছু মানসম্মত রিসোর্ট, রয়েছে ভাল খাবার হোটেল। সাজেকে স্বল্প মূল্যে আপনি রুম ভাড়া করতে পারেন। আপনি চাইলে ২০০ থেকে শুরু করে ১৫০০০ টাকার রুম ভাড়া করতে পারেন। সাজেকের বেশ কিছু মানসম্মত রিসোর্ট হল, মেঘপুঞ্জি, রুন্ময় রিসোর্ট, মেঘ মাচাং ইত্যাদি।
ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
সাজেক ভ্যালি এমন এমন একটি জায়গা যেটিকে সব ঋতুতেই নতুন নতুন রূপে দেখা যায়। তবে বর্ষায় এর সৌন্দর্য অতুলনীয়। পাহাড়ের চূড়া থেকে মেঘ দেখতে এবং সবুজের ফাঁকে ফাঁকে মেঘের দেখা পেতে আপনি সাজেক ভ্রমণ করতে পারেন বর্ষা কালে। তাছাড়া মেঘের শেষ এবং শীতের শুরুর সময়টাও বেশ উপভোগ্য ভ্রমণপিয়াসুদের জন্য ।
কলকাতা থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ করবেন যেভাবে
কাশ্মীর! যাকে বলা হয় ভূস্বর্গ। নাম শুনলেই হৃদয়ে এর সৌন্দর্য ভেসে উঠে। সবুজে মন দুলা দিয়ে যায়। নয়ন জুড়ে যায় কাশ্মীরের রূপে। ভ্রমণপিয়াসু মানুষের অন্যতম আকর্ষণ থাকে এই কাশ্মীরের প্রতি। আজকে আমরা কাশ্মীর ভ্রমণের খুঁটিনাটি জানব। যারা কলকাতা থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য আজকের এই গাইডলাইন।
আপনি চাইলে কলকাতা থেকে সরাসরি ট্রেনে করে জম্মু যেতে পারেন। কলকাতা থেকে জম্বু যেতে আপনার জন্য রয়েছে দুইটি ট্রেন, হিমগিরি ও জম্মু তাওয়াই। হিমগিরি রাত ১১ঃ৫০ মিনিটে হাওড়া থেকে জম্মুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটি সপ্তাহের তিন দিন মঙ্গলবার, শুক্র, ও শনিবার ছাড়ে। সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৩৫ ঘণ্টার উপর। অন্যদিকে জম্মু তাওয়াই প্রতিদিনই চলে, সময় একটু বেশি লাগে। ট্রেনে ভাড়া পড়বে ১২০০ থেকে ৫০০০ রুপি।
জম্মু নেমে আপনাকে যেতে হবে শ্রীনগর, বাসে করে বা রিজার্ভ দুই ভাবেই আপনি শ্রীনগর যেতে পারেন। বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ রুপি। আর যদি গাড়ি ভাড়া করতে চান তাহলে খরচ পড়বে ৫০০০ থেকে ৮০০০ রুপি। জম্মু থেকে শ্রীনগর যেতে আপনার সময় লাগবে ৮-১০ ঘণ্টা। আপনি জম্মু থেকে শ্রীনগর না গিয়ে সরাসরি পেহেলগামও যেতে পারেন। পেহেলগাম যেতে গাড়ি ভাড়া করতে হবে ৭০০০ থেকে ৮০০০ রুপি দিয়ে।
আবার কলকাতা থেকে অন্য পথেও জম্মু যাওয়া যায়। প্রথমে কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে করে যাবেন দিল্লি। সেখান থেকে আবার রাতে রাজধানী এক্সপ্রেসে করে যেতে পারেন জম্মু। ভাড়া পড়বে ৩০০০ থেকে ৪০০০ রুপি। এয়ারে যেতে হলে আপনি দিল্লি হয়ে শ্রীনগর যেতে পারেন।
কখন কাশ্মীর যাবেন
কাশ্মীর এমন একটি দর্শনীয় স্থান যেখানে সব ঋতুতেই আপনি গিয়ে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কাশ্মীরের মৌসুম মূলত চারটি যেমন গ্রীষ্ম (জুন, জুলাই, আগস্ট), শরৎ (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর), শীত (ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি) ও বসন্ত (মার্চ, এপ্রিল, মে)। এই মৌসুম গুলোকে বলা হয় যথাক্রমে, গ্রিনভ্যালি, ফ্রুট ভ্যালি, আর ফ্লাওয়ার ভ্যালি। চার মৌসুমে আপনি চার ধরণের রূপ দেখতে পাবেন কাশ্মীরে।
কাশ্মীরে কোথায় ঘুরবে
কাশ্মীরে ঘুরার মত অনেক জায়গা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কিছু স্পট নিচে উল্লেখ করা হল।
শ্রীনগর শহর
শ্রীনগর শহরে বেশ দর্শনীয় কিছু স্থান রয়েছে যেমন, ইন্দিরা গান্ধী টিউলিপ গার্ডেন, নিশাত বাগ, শালিমার বাগ, চাশমেশাহী বাগ, পারিমহল, নাগিন লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, হযরত বাল দরগাহ, শংকরাচার্যহিল, ডাল লেক ইত্যাদি। চাইলে একদিনেই সব গুলো জায়গা ঘুরে দেখা যায়। গাড়ি নিয়ে ঘুরলে খরচ হবে ২০০০ রুপি, আর অটোরিকশা নিলে লাগবে ৮০০ রুপি।
পাহেলগাম
কাশ্মীরের আরেকটা দর্শনীয় স্থান পাহেলগাম। পাহেলগাম শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯৭ কিমি দূরে অবস্থিত। ট্যাক্সি ভাড়া করে পাহেলগাম যাওয়া যায়। রাস্তায় পড়বে সুন্দর আপেল বাগান। পাহেলগামে দেখার মত রয়েছে, সান টেম্পল, তুলিয়ান লেক, মানষি লেক, আরু ভ্যালি, বেতাব ভ্যালি, চান্দেনওয়ারি, লিদারওয়াত রিভার, মিনি সুইজারল্যান্ড খ্যাত বাইসারান, ইত্যাদি।
গুলমার্গ
বরফ দেখতে চান? তাহলে গুলমার্গ আপনার জন্য। সারা বছরই এখানে বরফ দেখা যায়। এটি শীনগর থেকে প্রায় ৫২ কিমি দূরে অবস্থিত। শ্রীনগর শহর থেকে গুলমার্গ যেতে হলে আপনাকে গাড়ি ভাড়া দিতে হবে ২০০০ রুপি। গুলমার্গে আপনি পাবেন দুই ধাপের ক্যাবল কার বা রোপওয়ে। কিছু সময় প্রথম ধাপ পরেই বরফ দেখা যায় আবার কখনো দ্বিতীয় ধাপে উঠতে হয়। প্রথম ধাপে আপনাকে ৭৫০ রুপি দিতে হবে এবং দ্বিতীয় ধাপে ৯০০ রুপি দিতে হবে। যদি স্নো স্কেটিং করতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ৭০০ থেকে ১০০০ রুপি। তাছাড়া বরফে মজা করার জন্য রয়েছে, স্কেটিং, স্কুটার, প্যারাগ্লাইডিং ইত্যাদি।
কোথায় থাকবেন
কাশ্মীরে থাকা নিয়ে কোন সমস্যা নেই। আপনি কমের মধ্যেই এখানে ভাল ভাবে থাকতে পারবেন। ১২০০ থেকে ২০০০ রুপির মধ্যে এখানে ভাল মানের রুম পেয়ে যাবেন আপনি। এখানে গ্রুপ করে থাকা যাবে খুব কম খরচের মধ্যেই। যেমন শ্রীনগরে আপনি ৫০০ থেকে ৫০০০ রুপির হোটেল পাবেন। যখন ইচ্ছা তখনই গিয়ে হোটেল নিতে পারেন।
এটাই ছিল কাশ্মীর ভ্রমণ নিয়ে খুঁটিনাটি। দর্শনীয় জায়গা ভ্রমণ করুন, নিজে নিরাপদে থাকুন, যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।