Binodon
বাংলার জনপ্রিয় মুখ, বাংলাদেশের মডেল ও অভিনেত্রী
জয়া আহসান
দুই বাংলার জনপ্রিয় মুখ, বাংলাদেশের মডেল ও অভিনেত্রী জয়া আহসান। স্বনামধন্য এই অভিনেত্রীর জন্ম ১ জুলাই। তিনি জন্মগ্রহণ করেন গোপালগঞ্জে, আসল নাম জয়া মাসউদ। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন মেরিল প্রথম আলো পুরষ্কার সহ অসংখ্য পুরষ্কার। তিনি বাংলাদেশের পাশাপাশি কাজ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সিনেমাতেও। জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী যিনি ভারতের ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
ছোট বেলা থেকেই জয়া আহসানের নাচ ও গানের প্রতি অনুরাগ ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় আজকে এ পর্যন্ত আসা। জয়া আহসান এর অভিষেক মডেলিং এবং ছোট পর্দায় কাজ করে হলেও আস্তে আস্তে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অন্য উচ্চতায়। তার প্রথম অভিনীত সিনেমা ব্যাচেলর। জয়া আহসানের দুইটি জনপ্রিয় সিনেমা হচ্ছে গেরিলা এবং চোরাবালি। দুটি চলচ্চিত্রের জন্যই তিনি টানা দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছেন। দেবী চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন দুই বাংলাতে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র “গেরিলা” সফল হলে তার ক্যারিয়ারে সাফল্যের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। এর থেকে তিনি নিয়মিত বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। তিনি এখন পর্যন্ত, ৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২ বার বাচসাস, ৭ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার এবং ৩ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন।
৩৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী এখনো যেভাবে নিজেকে ফিট রেখেছেন সেটা সত্যিই অবাক করার মত। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন লাস্যময়ী লুকে হাজির হন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী, সোশ্যাল মিডিয়া সরব হয়ে উঠে, ছেলে বুড়ো একটাই প্রশ্ন, জয়া আহসানের বয়স কত?
জয়া আহসান সমালোচিত হয়েছেন রাজকাহিনী নামে একটা সিনেমায় আপত্তিকর একটি দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য। দেশবিভাগ নিয়ে এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছিলেন পশ্চিম বঙ্গের জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। যদিও সিনেমাটির জন্য তিনি পরবর্তীতে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।
ভারতের খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়
বর্তমান সময়ে ভারতের একজন খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী হচ্ছে শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়। তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন ২৭ আগস্ট ১৯৬০ সালে। তার জন্ম কলকাতায়। তিনি সূচিকর্ম ও চিত্রাঙ্কনের জন্য বিখ্যাত।
শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায় তার চিত্রকর্ম কে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তার চিত্রে একই সাথে ফুটে উঠেছে গ্রাম বাংলা এবং শহুরে জীবনের প্রতিচ্ছবি। তিনি পড়াশুনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন এর কলাভবনে এবং লন্ডনের গোল্ডস্মিথ কলেজে। শুধু রঙ তুলিতে নিজের সৃজনশীলতাকে আটকে রাখেন নি, সূচিশিল্প ও কাঁথা শিল্পেও রেখেছেন কৃতিত্বের ছাপ।
শ্রেয়সী শিল্পকর্মের ভিত্তি লৌকিক মানবী-চেতনা, গ্রামীণ মানবীরা যে প্রাচীন কাল থেকে সুচের মাধ্যমে, সুতার বুনন করে শিল্প প্রতিভা দেখিয়ে গেছে তারই রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়। তার উল্লেখযোগ্য কিছু চিত্রকর্ম হচ্ছে এ ফ্রোজেন ড্রিম, মেমোরিজ উইদিন দ্বিতীয় এবং ও. কে. টাটা দ্বিতীয়।
শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায় এর কিছু উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম নিচে দেয়া হল,
ঘুংঘাট
দা এনভেলপ
হনুমান
heigh
মৃণাল সেনের বায়োপিকে চঞ্চল চৌধুরী, ফার্স্টলুকে আলোড়ন
সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফিল্ম মেকারদের একজন, মৃণাল সেন এর বায়োপিকের কিছু পোস্টার। মৃণাল সেন এর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে বাংলাদেশের সুনামধন্য অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে। ইতিমধ্যে পোস্টার গুলো ইন্টারনেট জুড়ে বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
ভারতে তৈরি হতে যাচ্ছে অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক মৃণাল সেন এর বায়োপিক। সিনেমাটির নাম দেয়া হয়েছে “পদাতিক”। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ভারতের অন্যতম সফল পরিচালক সৃজিত। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ পেয়েছে কারা অভিনয় করছে সিনেমাটিতে।
মৃণাল সেন ছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা পরিচালক। তিনি ১৯৮৩ সালে পদ্মভূষণ উপাধি পান, দাদাসাহেব ফলকে পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৮৩ সালে। তিনি চার বার পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার এবং ১৮ বার বিভিন্ন সেক্টরে পেয়েছেন ভারতীয় জাতীয় পুরস্কার। ভারতীয় পরিচালক হিসেবে জিতেছেন কান, ভেনিস এবং বার্লিন পুরস্কার । ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবদান অনস্বীকার্য।
‘পদাতিক’ সিনেমায় লিড রোলে অর্থাৎ মৃণাল সেন এর চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ! কয়েকদিন আগে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমন্ত্রণে কলকাতা ২৮ তম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যোগ দিয়েছিলেন। চঞ্চল চৌধুরী ছোট পর্দায় বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি, বড় পর্দার হাওয়া, আয়নাবাজি, মনপুরা, দেবী সিনেমার মাধ্যমে কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন।
পদাতিক সিনেমায় চঞ্চল চৌধুরীর তিনটা লুক প্রকাশ পেয়েছে। সব গুলো লুকেই চঞ্চল চৌধুরী ছিল সেরা। মনে হচ্ছে চঞ্চল চৌধুরীর মধ্যে মৃণাল সেন এরই প্রতিচ্ছবি। কিছু আগেও পদাতিক সিনেমাকে মেনশন করে শুভকামনা চঞ্চল চৌধুরীকে শুভকামনা জানিয়েছেন বলিউড শাহেন শাহ অমিতাভ বচ্চন।
প্যান ইন্ডিয়ানে রিলিজ বাংলাদেশী সিনেমা হাওয়া
২০২২ সালে মুক্তির পর থেকে বেশ আলোচনায় আছে “হাওয়া” সিনেমা, একই সাথে বেশ প্রশংসা কুড়চ্ছে সিনেমাটি। ২০২২ সালের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা ছিল মেজবাউর রহমান সুমনের এই ‘হাওয়া’। দেশের বাইরে রিলিজ করেও বেশ সুনাম অর্জন করেছে সিনেমাটি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়াতে প্যান ইন্ডিয়ানে রিলিজের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিনেমার পরিচালক।
মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় মহামারী চলাকালীন সময়ে হাওয়া কোন ধরণের VFX ছাড়া সরাসরি সমুদ্রে চিত্রায়িত হয়। ফ্যান্টাসি থ্রিলার ঘরনার এই সিনেমাটি রহস্য ঘেরা এক গল্প নিয়ে নির্মিত। সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সান মিউজিক এবং মোশন পিকচার্স। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল ও রিজভী রাজু সহ আরও অনেকে।
দেশে মুক্তি পাওয়ার পর টানা কয়েক মাস প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখানো হয়েছে। পরবর্তী মুক্তি দেয়া হয় দেশের বাইরে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মুক্তির পরেও বেশ দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছে এই বাংলা সিনেমাটি। যুক্তরাষ্ট্রের শোকেইস চেইনে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাস থিয়েটারে টানা চতুর্থ সপ্তাহ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়। দারুণ ব্যাপার হল যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম চারদিনে লেবার ডে উইকেন্ডে বক্স অফিসে ঝড় তুলে বক্স অফিস কমস্কোর এর ইউএস টপচার্টে ২৭ নাম্বারে পজিশন দখল করে নেয় সিনেমাটি।
অক্টোবরে রবীন্দ্রসদনের নন্দনে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে’ হাওয়া প্রদর্শিত হয়। সেখানে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। দর্শকচাপে সিনেমাটির শো বাড়াতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই দর্শকরা চেয়েছিল সিনেমাটি যেন কলকাতায় মুক্তির পায়। ভারতের চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনা সংস্থা রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট সিনেমাটি প্রদর্শনের দায়িত্ব নিয়েছে। প্রথমে কলকাতায় এবং পরে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে সিনেমাটি মুক্তি পায়। পুরো প্যান ইন্ডিয়া বলতে মুম্বাই, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলোতে মুক্তি পায় হাওয়া।
সিনেমাটি মুক্তির আগেই এর ব্যতিক্রমী পোস্টার এবং ট্রেইলারের এর জন্য সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় “হাওয়া” নামটি। ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি দুই বাংলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। হাওয়া সিনেমার জনপ্রিয়তা দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়লেও বিতর্কের মুখে পড়তে হয় সিনেমাটিকে। সিনেমায় প্রদর্শন করা কিছু দৃশ্যের জন্য বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মামলা করে বাংলাদেশের বন বিভাগ।
বাবা ছেলের যুগলবন্দী অসাধারণ সিনেমা “প্রজাপতি”
কলকাতায় মুক্তি পেল দেব এবং মিঠুন চক্রবর্তীর সিনেমা প্রজাপতি। ইতিমধ্যে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছে অভিজিৎ সেন এর পরিচালিত এই সিনেমাটি। বাবা ছেলের মিষ্টি মধুর সম্পর্ক নিয়ে তৈরি এই সিনেমাটি কখনো দর্শককে হাসিয়েছে কখনো বা কাঁদিয়েছে।
প্রজাপতি একটি সামাজিক সিনেমা, পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে দেখার মত মুভি এটি। এতে নেই কোন মারামারি, অতিরিক্ত আদিখ্যেতা। হাউজ ফুল দর্শকরা খুব ভাল ভাবেই বাবা ছেলের হাসি কান্না উপভোগ করেছে। সিনেমাটিতে আরেকটা চমৎকার দিক হচ্ছে এর গান গুলো। প্রজাপতি সিনেমাটিতে রয়েছে কানে শান্তি দেবার মত গান। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে বাবাদের অবদান কতটা, সেটা সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে।
সিনেমাটিতে দেব এবং মিঠুনের অসাধারণ অভিনয় সবার মন কেড়ে নিয়েছে। প্রায় সাত বছর পর এক সাথে অভিনয় করতে দেখা গেছে দুজনকে। এর আগে একশন ধর্মী সিনেমায় এই দুজন খ্যাতিমান তারকাকে দেখা গেলেও, প্রথম বারের মত একদম ভিন্ন ঘরনার সিনেমায় দেখা মিলেছে দুইজনকে। সিনেমাটির অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রায় ৬ দশক পরে মিঠুন এবং মমতা শঙ্করের ক্যামেস্ট্রি।
প্রজাপতি সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন Avijit Sen, অভিনয়ে ছিলেন, মিঠুন চক্রবর্তী, মমতা শঙ্কর, দেব, কারাজ মুখার্জী, কৌশানি মুখার্জী, সীতা ভট্টাচার্য আমবারিশ ভট্টাচার্য। প্রজাপতির অসাধারণ মিউজিকে ছিলেন, অনুপম রায়, সুরুজিৎ।
সিনেমার গল্পটি খুবই সাধারণ, স্ত্রী মারা যাবার পর ছেলেকে মানুষ করেছে গৌর চক্রবর্তী। নিজেই রান্না করেন ঘর সামলান। অন্য সবার মত ছেলে তার নিজের লাইফে ভীষণ ব্যস্ত! এই বয়সে আর দশটা বাবার মত গৌর চক্রবর্তীরও ইচ্ছে ছেলেকে বিয়ে করাবেন বউ ঘরে আনবেন। তো এভাবেই চলছিল তাদের জীবন। হঠাৎ গৌর চক্রবর্তীর দেখা হয় তার কলেজ বান্ধবী মমতার সাথে, একঘেয়ে জীবনে প্রশান্তির আশায় বিয়ে করতে চায় মমতাকে। আর এটা ঘিরেই ঝামেলার শুরু।
সিনেমাটি দেখার পর বেশিরভাগ মানুষ প্রশংসা করলেও অনেকে প্রজাপতিকে, বড় স্ক্রিনের সিরিয়াল বলে দাবি করছে। অনেকে আবার দেবকে এই ধরণের সাধারণ চরিত্রেও মানতে পারছে না, তাদের দাবী একশন হিরো কেন এই ধরণের রুল করবে। তবে যারা সামাজিক সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন, পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে চান তাদের জন্য দারুণ উপভোগ্য হতে পারে সিনেমাটি